শিফট এবং রোস্টার ম্যানেজ, কথাটা শুনতে যতোটা সহজ মনে হয় বাস্তবে ঠিক তার উল্টো। বিশেষ করে বড় টিমের জন্য তো আরও কঠিন। HR এবং লাইন ম্যানেজারের জন্য চ্যালেঞ্জিং একটা পার্ট হচ্ছে এই রোস্টার আর শিফট ম্যানেজমেন্ট সামলানো। আমাদের দেশে কল সেন্টার থেকে শুরু করে BPO এবং অনলাইন শপগুলোতে দেখা যায় একজন এমপ্লয়িই মাল্টিপল শিফটে কাজ করে থাকে। এমনকি অনেক সময় তারা নিজেরা নিজেদের সুবিধার্তে শিফট বাছাই করে। শিফটের এই ব্যাপারটা ম্যানুয়ালি মনে রাখা এবং সামলানো কঠিন হয়ে যায়। অন্যদিকে কার কখন শিফট, কে অফিসে থাকবে বা ছুটিতে যাবে, কীভাবে ছুটি ও ওভারটাইম ট্র্যাক করা হবে এসব নিয়ে হিসাবের জটিলতার শেষ নেই।
তবে কিছু স্মার্ট কৌশল আর একটি ভালো HR সফটওয়্যার ব্যবহার করলে এই জটিলতাগুলো অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। চলুন দেখে নেই সহজে শিফট ও রোস্টার ম্যানেজ করার ৫টি কার্যকর টিপস।
১. স্পষ্ট নিয়মনীতি ও কাজের সময় নির্ধারণ করুন
শিফট ম্যানেজমেন্টে কর্মীদের কাজের সময় বা দায়িত্ব ঠিকঠাক আপডেট না থাকলে বিশৃঙ্খলা হয়ে থাকে। তাই কাজের স্পষ্ট সময়সূচি তৈরি করে রাখাটা অত্যাবশ্যকীয়। মাসের শুরুতেই শিফট প্ল্যানিংটা করে ফেলতে পারেন। এতে শেষ মুহূর্তের গড়মিল কমে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। সময়সূচিতে যে বিষয়গুলো রাখতে পারেনঃ
– কর্মীর নাম
– শিফট টাইম (যেমন: সকাল ৯টা – বিকেল ৫টা)
– দায়িত্ব
– রোটেশনের নিয়ম
BRICKBOX HR-এর মতো সফটওয়্যারে আপনি এই শিডিউল গুলো সহজেই তৈরি করে রাখতে পারেন ও প্রয়োজনে আপডেট করতে পারেন রিয়েল-টাইমে।
২. অটোমেশন ব্যবহার করুন – ম্যানুয়াল নয়
ম্যানুয়ালি খাতায় লিখে কিংবা Excel শিটে রোস্টার মেইন্টেইন করাটা HR এবং লাইন ম্যানেজারের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক। ডুপ্লিকেট এন্ট্রি, ভুলে যাওয়া, টাইম কনফ্লিক্ট এসবে অনেক সময় নষ্ট হয়। কাজের ব্যাঘাত ঘটে থাকে। যেটা আপনি যখন অটোমেশন সফটওয়্যারে করবেন, তখন সে ঝামেলাটা পোহাতে হবে না। Attendance, Payroll -এর কাজও হবে স্মুথলি, ঠিকঠাক।
অটোমেশন সফটওয়্যারে আপনি যা যা করতে পারবেনঃ
– অটোম্যাটিক রোস্টার জেনারেশন
– কর্মীদের শিফট চেঞ্জের অনুরোধ ট্র্যাক
– ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক শিডিউলিং
৩. এমপ্লয়িদের ইনপুট নিন এবং ফ্লেক্সিবিলিটি দিন
সব কর্মী একই শিফটে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কর্মীদের ইনপুট দেওয়ার সুযোগ দিলে তারা বেশি কমফোর্ট ফিল করে এবং অনুপস্থিতির হার কমে। অনেকেই আছে সকালে ভালো কাজ করে, আবার কেউ রাতে। ফ্লেক্সিবিলিটির সুযোগ থাকলে তারা নিজেদের পছন্দের শিফট বেছে নিতে পারে। HR সফটওয়্যার প্লাটফর্মে এমপ্লয়িরা সহজেই শিফট কিংবা ছুটির এপ্লাই করতে পারে, অন্যদিকে HR টিম এক ক্লিকে অ্যাপ্রুভ বা রিজেক্ট করতে পারে।
৪. রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা চালু রাখুন
শিফটে এসাইন করা কর্মীদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কিংবা জরুরি কাজে ছুটি নিলে তার অনুপস্থিতির জায়গায় অন্য কর্মীকে রিপ্লেস জরুরি হয়ে পড়ে। অনেক সময় কাজটা কর্মীরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে, একজনের জায়গায় অন্যজন কাজ করে দেয়। যেটা ম্যানুয়ালি ম্যানেজ করা কষ্টকর হয়ে পরে। অটোমেটেড সিস্টেম রোস্টার পরিবর্তনের অনুরোধ গ্রহণ, অনুমোদন ও রিপ্লেসমেন্ট প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও নির্ভুল করে তোলে।
৫. ডাটা অ্যানালাইটিক্স ব্যবহার করুন
যেকোন প্রতিষ্ঠানের জন্য ডাটা অ্যানালাইটিক্স খুব কার্যকরী একটা জিনিস। রোস্টার কার্যকর হচ্ছে কিনা তা বোঝার জন্য ডাটা অ্যানালাইসিসের সাহায্য নিতে পারেন। যখন এমপ্লয়িদের,
– কোন শিফটে বেশি অনুপস্থিতি হয়?
– কোন সময়টা ওভারটাইম বেশি লাগে?
– কোন ডিপার্টমেন্টে বেশি শিফট চেঞ্জ হয়?
এসব তথ্য যখন হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছেন তখন সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়বে। ভবিষ্যতের রোস্টার আরও কার্যকর করতে সাহায্য করবে। কর্মী সন্তুষ্টি বাড়ার সাথে ঝামেলা কমবে।